এসএসসি ২০২২ ১৪শ সপ্তাহের গণিত এবং ইতিহাসঅ্যাসাইনমেন্ট উত্তর
এসএসসি ২০২২ ১৪শ সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর |
এসএসসি 2022 সালের 14 সপ্তাহের গণিত এবং বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা উত্তর
এসএসসি 2022 সালের 14শ সপ্তাহের গণিত অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর
১নং সমাধান:
বিশেষ নির্বচনঃ একটি কয়েন দেওয়া আছে। কয়েনের কেন্দ্র নির্ণয় করতে হবে।
অঙ্কনঃ প্রদত্ত কয়েনের পরিধিতে তিনটি বিন্দু A, B ও C নিই। A, B ও B, C যোগ করি। AB ও BC জ্যা দুইটির লম্বসমদ্বখন্ডক যথাক্রমে EF ও GH রেখাংশ দুইটি টানি। মনে করি তারা পরষ্পর O বিন্দুতে ছেদ করে।
সুতরাং O বিন্দুই হচ্ছে কয়েনটির কেন্দ্র।
২ নং সমাধান
বিশেষ নিবচনঃ মনে করি, A ও B কেন্দ্রবিশিষ্ট একই আকৃতির দুইটি কয়েন (বৃত্ত) পরস্পর O বিন্দুতে বহিঃস্পর্শ করে। প্রমাণ করতে হবে যে, দুইটি কয়েনের কেন্দ্রদ্বয়ের দূরত্ব তাদের সাধারণ ব্যাসার্ধের দ্বিগুণ।
অঙ্কনঃ যেহেতু বৃত্তদ্বয় পরস্পর বিন্দুতে স্পর্শ করেছে, সুতরাং O বিন্দুতে এদের একটি সাধারণ স্পর্শক থাকবে। এখন O বিন্দুতে সাধারণ স্পর্শক POQ অঙ্কন করি এবং Q, A ও Q, B যোগ করি।
প্রমাণঃ যেহেতু A কেন্দ্রবিশিষ্ট বৃত্তে OA স্পর্শবিন্দুগামী ব্যাসার্ধ এবং POQ স্পর্শ।
সুতরাং কোণ POA = এক সমকোণ
একইভাবে, কোণ POB = এক সমকোণ
এখন, কোণ POA + কোণ POB=এক সমকোণ+এক সমকোণ=দুই সমকোণ।
বা, কোণ AOB = দুই সমকোণ
:: কোণ AOB = এক সরলকোণ।
সুতরাং A, O, B বিন্দুত্রয় সমরেখ বা একই সরলরেখায় অবস্থিত।
অতএব, কয়েন দুটির,
কেন্দ্রদ্বয়ের দূরত্ব = AB
=AO+AO [একই আকৃতির কয়েন হওয়ায় তাদের ব্যাসার্ধ সমান]
= 2AO
সুতরাং দুইটি কয়েনের কেন্দ্রদ্বয়ের দূরত্ব তাদের সাধারণ ব্যাসার্ধের দ্বিগুণ ।
৩ নং সমাধান:-
১নং ও ২নং হতে পাই,
যেকোনো দুটি কয়েনের কেন্দ্রদ্বয়ের দূরত্ব = সাধারণ ব্যাসার্ধের দ্বিগুণ AB = BC = AC = 2r
সুতরাং এটি একটি সমবাহু ত্রিভূজ ।
আবার, সমবাহু ত্রিভুজের প্রত্যেকটি কোণ 60°
অর্থ্যাৎ কোণ ABC=কোণ ACB =কোণ CAB = 60° | যেহেতু ‘ক’ কয়েনের (বৃত্তের)কেন্দ্রে উৎপন্ন মোট
কোণের পরিমাণ = 360°
‘ক’ কয়েন, স্পর্শ করা কয়েনের সংখ্যা = 360÷60 = 6 টি
সুতরাং একটি কয়েনের চারপাশে কয়েনটিকে স্পর্শ করে ঠিক একই আকারের 6টি কয়েন বসানো যাবে।
৪ নং সমাধান:
বিশেষ নির্বচনঃ যে কোন কয়েনের (বৃত্তের) পরিধিতে, A,B,C,D চারটি বিন্দু এমনভাবে স্থাপন করি যেন, AB ।। DC হয়। প্রমাণ করতে হবে যে, AD = BC
অঙ্কনঃ A,B; B,C; C,D;D,A এবং B,D যোগ করি।
প্রমাণঃ যেহেতু AB ।। CD এবং BD তাদের ছেদক। সুতরাং কোণ ABD = কোণ BDC [একান্তর কোণ বলে]
:: AD চাপের উপর দন্ডায়মান বৃত্তস্থ কোণ BC চাপের উপর = দন্ডায়মান বৃত্তস্থ কোণ
বা, AD চাপ = BC চাপ
অর্থাৎ AD জ্যা BC জ্যা [দুটি বৃত্তচাপ সমান হলে তাদের জ্যাদ্বয় সমান হবে]
:: AD = BC (প্রমাণিত)
এসএসসি ২০২২ সালের ১৪শ সপ্তাহের বাংলাদেশের ইতিহাস ও বিশ্বসভ্যতা অ্যাসাইনমেন্ট উত্তর
(ক) নং প্রশ্নের উত্তর:
প্রাচীন বাংলার গুরুত্বপূর্ণ রাজবংশসমূহের নাম ধারাবাহিকভারে(খ্রিষ্টপূর্বাব্দ ৩২৬-১২০৪ খ্রিষ্টাব্দ) নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ
১। মৌর্য ও গুপ্ত যুগে বাংলা
২। গুপ্ত-পরবর্তী বাংলা
৩। স্বাধীন বঙ্গ রাজ্য
৪। স্বাধীন গৌড় রাজ্য
৫। শশাংক
৬। মাৎস্যন্যায় ও পাল বংশ
৭। খড়গ বংশ
৮।দেব বংশ
৯। চন্দ্রবংশ
১০। বর্ম বংশ
খ) নং প্রশ্নের উত্তর:
প্রাচীন বাংলার উল্লেখযোগ্য শাসকদের অবদান নিম্নে বর্ণনা করা হলোঃ
মৌর্য বংশঃ মৌর্য সম্রাজ্যকে ভারতীয় উপমহাদেশের প্রথম সর্বভারতীয় সম্রাজ্য বলা হয়ে থাকে। খ্রিষ্টপূর্ব ষষ্ঠ শতক থেকে বাংলার অধিকাংশ অঞ্চলই শক্তিশালী মগধ রাজ্যের অংশ ছিল। মগধ ছিল একটি প্রাচীন ভারতীয়-আর্য রাজ্য। মগধের কথা রামায়ণ এবং মহাভারতেও পাওয়া যায়। বুদ্ধের সময়ে এটি ছিল ভারতের চারটি প্রধান রাজ্যের মধ্যে একটি। বিহার এবং বাংলার অধিকাংশ স্থানই মগধের ভিতরে ছিল । নন্দ রাজবংশকে মগধ থেকে উচ্ছেদ করে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য বাংলায় মৌর্য বংশের আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেন।
পাল বংশঃ বাংলায় বংশানুক্রমিক শাসন শুরু হয় পাল আমল থেকে। প্রায় চারশ বছর পাল বংশের রাজাগণ বাংলায় রাজত্ব করেছেন। পালবংশ বাংলা শাসনকারী দীর্ঘস্থায়ী রাজবংশ। এ বংশের রাজারা ছিল বৌদ্ধ ধর্মাবলী।
চন্দ্ৰগুপ্ত মৌর্যঃ চন্দ্ৰগুপ্ত মৌর্য মগধের সিংহাসনে আরোহনের মাধ্যমে মৌর্য সম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন। তিনি ছিলেন ভারতের প্রথম সম্রাট। তার রাজধানী ছিল পটালিপুত্র। চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য তার প্রধানমন্ত্রী চাণক্যের সহযোগীতায় বিশাল মৌর্য সম্রাজ্য গড়ে তুলেছিলেন।
গুপ্ত বংশঃ গুপ্তযুগকে ভারতের স্বর্ণযুগ হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। এ যুগে ভারতের শিল্পকলা ও স্থাপত্য অন্যন্য উচ্চতায় পৌঁছায়। শক্তিশালী গুপ্ত সাম্রাজ্য মগধেই গড়ে উঠেছিল যা ভারতীয় উপমহাদেশের উত্তরাংশে, বাংলাদেশ ও সম্ভবত পাকিস্তানের কিছু অংশেও বিস্তার লাভ করেছিল । গুপ্ত রাজারা ছিলেন হিন্দু ধর্মের পৃষ্ঠপোষক। মহাকবি কালিদাস, বিজ্ঞানী আর্যভট্ট ও বাহারমিহির প্রভৃতি গুণী ব্যক্তির আবির্ভাব হয় গুপ্ত শাসনামলে। মহারাজা শ্রীগুপ্ত ছিলেন এ বংশের প্রতিষ্ঠাতা এবং রাজধানী ছিল পটালিপুত্র।
মমন্যায়ঃ শশাঙ্কের পর অরাজকতাপূর্ণ সময়কে (৭ম-৮ম শতক) বলে মাৎস্যন্যায়। পুকুরে বড় মাছগুলো শক্তিরদাপটে ছোট ছোট মাছ ধরে খেযে ফেলার পরিস্থিতিকে বলে মাৎস্যন্যায়। ৭-৮শতক বাংলার সকল অধিপতিরা ছোট ছোট অঞ্চলগুলোকে গ্রাস করেছিল। ফলে এক অরাজক পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। মাৎস্যন্যায় প্রায় দেড়শো বছর স্থায়ী হয়। মূলত গুপ্ত ও পাল শাসনের মধ্যবর্তী যুগই মাৎস্যন্যায়।
(গ) নং প্রশ্নের উত্তর
দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার রাজ্যসমূহ নিম্নে উল্লেখ করা হলোঃ
পাল যুগের অধিকাংশ সময়েই দক্ষিণ-পূর্ব বাংলা স্বাধীন ছিল। তখন এ অঞ্চলটি ছিল বঙ্গ জনপদের অন্তর্ভুক্ত । অষ্টমশতকের মাঝামাঝি থেকে বেশ কিছু রাজবংশের রাজারা কখনো পাল রাজাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে স্বাধীনভাবে তাদের এলাকা শাসন করতেন, আবার কখনো পাল রাজাদের অধীনতা স্বীকার করে চলতেন।
খড়গ বংশঃ সপ্তম শতকের দ্বিতীয়ার্ধে মগধ ও গৌড়ে পরবর্তী গুপ্তবংশীয় রাজারা প্রভুত্ব স্থাপন করেন। এ সময় খড়গ বংশের রাজারা দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় একটি স্বাধীন রাজ্য প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁদের রাজধানীর নাম ছিল কর্মান্ত-বাসাক। কুমিল্লা জেলার বড় কামতার প্রাচীন নামই সম্ভবত এ কর্মান্ত-বাসাক। খড়গদের অধিকার ত্রিপুরা ও নোয়াখালী অঞ্চলের ওপর।
দেববংশঃ খড়গ বংশের শাসনের পর একই অঞ্চলে অষ্টম শতকের শুরুতে দেব বংশের উত্থান ঘটে। বংশের চারজন রাজার নাম পাওয়া যায়। এরা হলেন শ্রী শান্তিদেব, শ্রী বীরদেব, শ্রী আনন্দদেবও শ্রী ভবদেব দেব রাজারা নিজেদের খুব শক্তিধর মনে করতেন। তাই তাঁরা তাঁদের নামের সাথে যুক্ত করতেন বড় বড় উপাধি। যেমন- পরমেশ্বর, মহারাজাধিরাজ,পরম মৌগত, পরম ভট্টারক ইত্যাদি, তাঁদের রাজধানী ছিল দেবপর্বতে। কুমিল্লার নিকট ময়নামতির কাছে ছিল দেবপর্বত। দেবদের রাজত্ব বিস্তৃত ছিল সমগ্র সমতট অঞ্চলে। আনুমানিক ৭৪০ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ৮০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত দেবরাজরা শাসন করেন। পাল রাজাদের মতো শক্তিশালী এ দেব রাজারাও ছিলেন বৌদ্ধ।
কান্তিদেবের রাজ্যঃ দক্ষিণ-পূর্ব বাংলার হরিকেল জনপদে নবম শতকে একটি স্বাধীন রাজ্যের উদ্ভব ঘটে। এ রাজ্যের রাজা ছিলেন কান্তিদেব দেব রাজবংশের সঙ্গে কান্তি দেবের কোনো সম্পর্ক ছিল কি-না তা জানা যায়নি। তাঁর পিতা ছিলেন ধনদত্ত ও পিতামহ ভদ্রদত্ত। বর্তমান সিলেট কান্তিদেবের রাজ্যভুক্ত ছিল। তাঁর রাজধানীর নাম ছিল বর্ধমানপুর। বর্তমানে এ নামে কোনো অঞ্চলের অস্তিত্ব নেই। এসময়ে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় চন্দ্রবংশ বলে পরিচিত নতুন এক শক্তির উদয় হয়। কান্তিদেবের গড়া রাজ্যের পতন হয় চন্দ্রবংশের হাতে ।
ঘ) নং প্রশ্নের উত্তর:
নিম্নে প্রাচীন বাংলার শাসনব্যবস্থার সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হলোঃ
গুপ্ত শাসনের পূর্বে প্রাচীন বাংলার রাজ্যশাসন পদ্ধতি সম্বন্ধে সঠিক কোনো বিবরণ পাওয়া যায়নি। এ দেশে গুপ্ত শাসন প্রতিষ্ঠার পূর্বে কৌমসমাজ ছিল সর্বেসর্বা। তখন রাজা ছিলনা, রাজত্ব ছিল না। তবু শাসন-পদ্ধতি সামান্য মাত্রায় ছিল। তখন মানুষ একসাথে বসবাস করত। কৌমদের মধ্যে পঞ্চায়েত প্রথায় পঞ্চায়েত দ্বারা নির্বাচিত দলনেতা স্থানীয় কৌম শাসন ব্যবস্থায় নেতৃত্ব দিতেন। বাংলার এ কৌম ব্যবস্থা চিরস্থায়ী হয়নি। খ্রিষ্টপূর্ব চতুর্থ শতকের পূর্বেই বাংলায় কৌমতন্ত্র ভেঙে গিয়ে রাজ তন্ত্রের পূর্ণ বিকাশ ঘটেছিল। গুপ্তদের সময় বাংলার শাসন পদ্ধতির পরিস্কার বিবরণ পাওয়া যায়। আনুমানিক দুই-তিন শতকে উত্তরবঙ্গ মৌর্য সাম্রাজ্যের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। বাংলায় মৌর্য শাসনের কেন্দ্রছিল পুণ্ড্রনগর-বর্তমান বগুড়ার পাঁচ মাইল দূরে মহাস্থানগড়ে। অনুমান করা হয় ‘মহামাত্র’ নামক একজন রাজপ্রতিনিধির মাধ্যমে, তখন বাংলায় মৌর্য শাসনকার্য পরিচালিত হতো। বাংলা গুপ্ত সাম্রাজ্যভুক্ত হলেও সমগ্র বাংলা গুপ্ত সম্রাটদের সরাসরি শাসনে ছিল না। বাংলার যে অংশ গুপ্ত সম্রাটদের সরাসরি শাসনে ছিল না তা'মহারাজা' উপাধিধারী মহাসামত্তগণ প্রায় স্বাধীন ও আলাদাভাবে শাসন করতেন। এ সকল সামন্ত রাজা সবসময় গুপ্ত সম্রাটের কতৃত্বকে মেনে চলতেন। ধীরে ধীরে বাংলার সর্বত্র গুপ্ত সম্রাটদের শাসন চালু হয়। এ মহাসামন্তদের অধীনে বহু কর্মচারী নিযুক্ত থাকতেন। বাংলাদেশের যে অংশ সরাসরি গুপ্ত সম্রাটদের অধীনে ছিল তা কয়েকটি প্রশাসনিক বিভাগে বিভক্ত ছিল। এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় বিভাগের নাম ছিল ‘ভুক্তি’। প্রত্যেক ‘ভুক্তি’ আবার কয়েকটি বিষয়ে, প্রত্যেক বিষয় কয়েকটি মণ্ডলে, প্রত্যেক মণ্ডল কয়েকটি বীথিতে এবং প্রত্যেকটি বীথি কয়েকটি গ্রামে বিভক্ত ছিল । গ্রামই ছিল সবচেয়ে ছোট শাসন বিভাগ ।
কোন মন্তব্য নেই